
সাব্বির মির্জা, (তাড়াশ) প্রতিনিধিঃ
মঞ্জুর আলম বাবু (৫২)। তাঁর প্রিয়তমা মানুষিক প্রতিবন্ধী স্ত্রী হলেন, জয়া আলম (৩৮)। স্বামী- স্ত্রী‘তে গত শনিবার মঞ্জুর আলম বাবু সিরাজগঞ্জের তাড়াশে দেশিগ্রাম ইউনিয়নের কাটাগাড়ী গ্রামে বোনের বাড়িতে মটর বাইকে চেপে বেড়াতে আসেন। এরপর দুপুরে স্ত্রী‘কে নিয়ে দুপুরের খাবার খেতে বসেন। এক ফাঁকে স্ত্রী জয়া আলম বাহিরে উঠানে কাজ আছে বলে ঘরের বাহিরে যান। তারপর খাওয়া শেষে বাহিরে এসে মঞ্জুর আলম বাবু দেখেন স্ত্রী নেই। তখন থেকেই শুরু হয় খোঁজাখুঁজি। কিন্তু গত ছয় দিনেও বাবু তাঁর স্ত্রীকে খুঁজে পাননি। সেই সঙ্গে প্রিয়তমা স্ত্রী‘কে খুঁজে না পেয়ে বাবুরও এখন পাগল প্রায় অবস্থা।
মঞ্জুর আলম বাবুর বাড়ি পাবনা জেলার বেড়া উপজেলার কাশিনাথপুর এলাকায়। তিনি পেশায় একজন ট্রাক চালক।
বাবু জানান, তিনি মানুষিক প্রতিবন্ধী জয়াকে ভালবেসে বিয়ে করেন। জয়ার প্রতি তাঁর এতই ভালবাসা যে, ট্রাক চালিয়ে গভীর রাতে বাড়ি ফিরে স্ত্রীকে ছাড়া খাবার মুখে তোলেন না। আবার স্ত্রী‘র মাথায় তেল দেওয়া, তাঁর পরিধেয় পোশাক পরিস্কার করা, নখ কাটা এমনকি যে কোন আত্মীয় – স্বজনের বাড়িতে বেড়াতে গেলে মানুষিক প্রতিবন্ধী হলেও স্ত্রী জয়াকে নিয়েই যান। এমন ভালবাসার মানুষটিকে হারিয়ে তিনি এখন পাগলের মত তাড়াশ এলাকার আনাচে- কানাচে খুঁজে ফিরছেন জয়াকে। কিন্তু ছয়দিনেও তাঁর সন্ধান করতে পারেনি বাবু।
এ দিকে বৃহস্পতিবার সকালে তাড়াশ পৌর সদরের বারোয়ারী বটতলা এলাকায় স্ত্রী‘র সন্ধানে ছবি ও মোবাইল নাম্বার সম্বলীত লিফলেট বিতরণকালে দেখা মেলে বাবুর। তিনি দোকানে দোকানে, পথচারী, ভ্যানচালকসহ অনেকের মাঝে স্ত্রী‘র সন্ধানে লিফলেট বিতরণ করছেন।
এ সময় মঞ্জুর আলম বাবু সমকালকে জানান, এরই মাঝে গত ছয়দিনে স্ত্রী জয়া আলমকে খঁজতে তিনি নিঃঘুম কাটিয়েছেন। এলাকার বিভিন্ন স্থানে যেতে প্রায় দুই হাজার কিলোমিটার মটর বাইক চালিয়েছেন। লিফলেট বিতরণ করেছেন প্রায় দশ হাজারের মতো। মুখে মুখে অবহিত করেছেন এলাকার শত শত মানুষকে। এ সময় তিনি কান্নাজড়িত কন্ঠে প্রতিবন্ধী স্ত্রী‘র খোঁজ পেতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
এ প্রসঙ্গে তাড়াশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়াউর রহমান বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। আর ভুক্তভোগি থানাকে অবহিত বা সাধারণ ডায়েরিও করেনি।
Leave a Reply