1. admin@kholabarta.com : admin :
মাদকের স্বর্গরাজ্য ঘুষ বানিজ্যেও শ্রেষ্ঠ,ওসি হিসেবেও শ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন - খোলা বার্তা
শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৩:৩৭ পূর্বাহ্ন

মাদকের স্বর্গরাজ্য ঘুষ বানিজ্যেও শ্রেষ্ঠ,ওসি হিসেবেও শ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন

  • Update Time : মঙ্গলবার, ৫ আগস্ট, ২০২৫
  • ৫০ Time View

পাভেল ইসলাম মিমুলঃ

ঘুষ বানিজ্য করেও রহস্যজনকভাবে গোদাগাড়ী মডেল থানার শ্রেষ্ঠ ওসির পুরষ্কার পাওয়ায় স্থানীয়দের মাঝে বইছে আলোচনা সমালোচনার ঝড়। রাজশাহীর মাদকের অন্যত্তম ঘাটি গোদাগাড়ী থানা অঞ্চল।

দৃশ্যমান মাদকের বড় চালান আটক না হলেও মাদকের হট স্পর্ট খ্যাত গোদাগাড়ী হতে মাসোহারা আসে প্রায় অর্ধকোটি টাকা।দরিদ্র মানুষের মামলা না নেওয়া,মাদক ব্যবসায়ীদের সাথে সখ্যতা রেখে মাদক কারবারে সহায়তা করা,কারবারীদের কাছে মাসিক মাসোয়ারা উত্তোলন,ঘুস বানিজ্য সহ একাধিক অভিযোগ থাকলেও বারবার জেলা ও বিভাগের শ্রেষ্ঠ ওসি নির্বাচিত হয়েছেন রুহুল আমিন। এ নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। গোদাগাড়ী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ এনে জাতীয় দৈনিক ও অনলাইনে একাধিক নিউজ প্রকাশ হলেও বহাল তবিয়তে আছেন তিনি।

গত ১১ মে ” গরিবের মামলায় গুরুত্ব নেই ওসির : বিত্তবানদের প্রভাব ” শিরোনামে জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় ওসি রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে নিউজ প্রকাশিত হয়। এতে কয়েকজন ভুক্তভোগী পরিবারের রেফারেন্স দেওয়া হয়।
এছাড়াও অন্য আরেকটি পত্রিকায় “রাজশাহীর গোদাগাড়ী মডেল থানার ওসি রুহুল আমিন মাদক রাজ্যের শ্রেষ্ঠ ওসি, ঘুষ ও মাসোহারা আদায় করেন এস আই মাসুদ সহ কয়েকজন ” শিরোনামে নিউজ প্রকাশ হয়। এতো অভিযোগের পরেও ওসি রুহুল আমিন শ্রেষ্ঠ ওসি কিভাবে নির্বাচিত হয় তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে জনমনে। এমনকি সে সময় ঘটনার তদন্তও করা হয়নি। কথিত আছে,ওসি রুহুল আমিন মাসোহারার মোটা অংকের উৎকোচ দেন উর্ধতন মহলে। এ কারণে তার ব্যাপারে উদাসীন উর্ধতন মহল।
সম্প্রতি আদালত কতৃক রিসিভার নিযুক্ত হয়ে পুকুর লিজে ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকার ঘুষ লেনদেনের খবর পাওয়া গেছে ওসির বিরুদ্ধে।জিয়ারুল ইসলাম নামের এক পুকুর ব্যবসায়ী ৪ লক্ষ ৮৫ হাজার টাকায় গোদাগাড়ীর দিগরাম মৌজায় ৪ একর পরিমান একটি পুকুরের লিজ গ্রহণ করেন।( ঐ পুকুরের আরএস দাগ নং ৪২, এসএ দাগ নং ৭৫, জেএল নং ৪৬) ওসি রুহুল আমিন রিসিভার নিযুক্ত হয়ে গোপনে গত ১৬ এপ্রিল পুকুরটি জিয়ারুলকে লিজ দেন। বিনিময়ে ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা অতিরিক্ত আদায় করেন (অডিও রেকর্ড সংরক্ষিত)।

পুকুর ব্যবসায়ী জিয়ারুল ইসলাম বলেন,দীর্ঘ ১০ বছর থেকে আমি পুকুরটি লিজ নিয়ে আসছি। আমি প্রতিবারই থানায় ১ লক্ষ ৩০ হাজার করে টাকা দিই। আর লিজ বাবদ যা ধরা হয় সেটাও পরিশোধ করি। এর আগে তো এসব বিষয় নিয়ে কোন কথা হয়নি। আপনাদের এসব নিউজ করার দরকার নাই। আরও অন্যান্য বিষয় আছে সেগুলো নিয়ে ওসির বিরুদ্ধে নিউজ করেন। এটা নিয়ে নিউজ করিয়েন না ভাই।

আওয়ামীলীগের বিরুদ্ধে হওয়া মামলা নিয়েও ওসির বিরুদ্ধে ঘুস বানিজ্যের তথ্য পাওয়া গেছে। শ্রীমন্ত পুর এলাকার আব্দুল জলিলের ছেলে জুবায়ের। নাশকতা ও বিস্ফোরক মামলায় গ্রেফতার হয় গত মে মাসের ১২ তারিখে। কারাবাসে ছিলেন প্রায় ২০ দিন। কারাবাস শেষে জুবায়ের জানান, তৎকালীন এমপি ফারুক চৌধুরীর স্বঘোষিত গোদাগাড়ী পৌর ছাত্রলীগের কমিটির সহ-
সভাপতি বানানো হয়েছিল তাকে। তিনি সক্রিয় ছিলেন না রাজনীতিতে। তবুও জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে তার চাচাতো মামা পুলিশের এসআই সেলিম রেজা গোদাগাড়ীর ওসিকে প্রভাবিত করে তাকে নাশকতা মামলায় গ্রেফতার করায়। যদিও এজাহারে তার কোন নাম ছিলো না। পরে ওসি রুহুল আমিন তাকে আরও অন্যান্য যেসব মামলা আছে সেগুলোতেও গ্রেফতার দেখানোর ভয় দেখায়। পরে আর কোন মামলা না দেওয়ার শর্তে ২ লক্ষ টাকা দাবি করেন। পরে নিরুপায় হয়ে তাকে (ওসিকে) ২ লক্ষ টাকা দেয় জুবায়ের। অপরদিকে নাম প্রকাশ না করা শর্তে কয়েকজন ভুক্তভোগী বলেন, আ’লীগের মামলার ভয় দেখিয়ে অর্থ দাবি করা হয়েছে অনেকের নিকট। পদ পদবী না থাকলেও দিতে হয়েছে টাকা। মামলা নাম জড়ানোর ভয়ে মুখ খুলতে চাইছে না কেউ। ছবি বানিজ্যের মতো ঘটনা ঘটেছে থানায়।

ভুক্তভোগী একজন বলেন আমি আ’লীগের একটি প্রোগ্রামে ছিলাম মর্মে ছবি দেখিয়ে ভয় দেখানো হয়। পরে টাকা দিয়ে বেঁচে যাই। ছাড় পায়নি বিএনপি কর্মীও। এখনো ভয়ে আছেন কয়েকজন বিএনপি’র সমর্থক।

ফোন কলে কয়েকজন মাদক কারবারি জানায়, থানায় টাকা দিয়ে ব্যবসা করি। কাউকে গোনার টাইম নাই। পরিচয় গোপন রেখে কয়েকজন মাদকের গডফাদারের সঙ্গে কথা বললে তারা বলেন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে এখন থানায় বেশি টাকা দিতে হচ্ছে। কয়েকটি অভিযানের আটক মাদকের এক অংশ আবার টাকার বিনিময়ে মাদক কারবারিদের নিকট দিয়ে দিচ্ছে থানা পুলিশ। মাদকের মাসোহারা উত্তোলনে একজন এস আই দ্বায়িত্ব প্রাপ্ত হয়েছেন। তিনি প্রতিমাসে মাদক কারবারিদের নিকট থেকে টাকা নিয়ে আসেন। বড় বড় মাদক কারবারিরা তাদের প্রতিনিধির মাধ্যমে সরাসরি ওসিকে টাকা দেন।

এদিকে, একের পর এক ঘুস বানিজ্য করেও শ্রেষ্ঠ ওসির পুরষ্কার পাওয়ায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কমেন্ট বক্সেও নানা সমালোচনা হয় ওসির বিরুদ্ধে। তবুও সমালোচনার উর্ধে থেকে পুরষ্কারে কিভাবে ভূষিত হন এ নিয়ে প্রশ্ন সচেতন মহলে।

স্থানীয়দের দাবি,গোদাগাড়ীতে মাদক নিমূলে একজন সৎ পুলিশ অফিসার প্রয়োজন।অন্যান্য প্রশাসন যখন কেজি কেজি হেরোইন জব্দ করে, সেখানে গোদাগাড়ী থানার পুলিশের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ।

উল্লেখ্য,গোদাগাড়ী মডেল থানার ওসি রুহুল আমিন গোদাগাড়ীতে যোগদানের পর প্রায় ৫ বার তার কৃতকর্মের ফলে পুরষ্কৃত হয়।

এ বিষয়ে কথা বললে গোদাগাড়ী মডেল থানার ওসি রুহুল আমিন বলেন, আমার বিরুদ্ধে উঠা সকল অভিযোগ মিথ্যা। আমি কারো কাছে টাকা নেইনি। মাদকের সাথে আমি কোনোভাবেই জড়িত না। মাসোহারা নেওয়ার প্রশ্নই উঠে না।

রাজশাহী জেলা পুলিশের মিডিয়া মুখপাত্র (অতিরিক্ত পুলিশ সুপার) রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি অসুস্থ, ছুটিতে আছি। বক্তব্য নিতে চাইলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) ০১৩২০-১২২৫০৩ নম্বরে যোগাযোগের পরামর্শ দেন। ওই নম্বরে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। এ কারণে তাঁদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
খোলা বার্তা অনলাইন সংরক্ষণ ২০২৪
Design & Developed BY: BD IT HOST