
লেখক, মু. আসাদুল্লাহ খান ( প্রধান নির্বাহী খোলা কলাম):
কখনো খেলার মাঠে, কখনো ব্রীজের রেলিং এর উপর, কখনো বাজারের চায়ের দোকানের পেছনের চিপায়, কখনো….ব্যাস্ত বাজারের অলস কোনায়…প্রতিদিন দীর্ঘসময় ধরে আড্ডা দিচ্ছে একদল তরুণ এবং যুবক। আপনি-আমি হয়তো বিরক্তির চোখে দেখছি। মনে মনে অনেক তিরস্কার করছি।
“ওসব নেশাখোর..বাবা খোর…গান্জুটে…নিকর্মা ” / ” বখে গেছে… এরা আর ভালো হবে না” / ” কাম-কাজ নাই খালি অকাম করে বেড়াচ্ছে” এই কমন ডায়লগগুলো জোড়ে কিংবা আস্তে দিয়ে নিজের গুরুদায়িত্ব সম্পন্ন করে বড্ড সুশীল বনে যাচ্ছি। কিন্তু সভ্য সমাজের এই অসভ্য অংশের কারিগর যে আমরাই, তা কি আদৌ জানি ? এখন বলবো , ” আরে ভাই, পাগল নাকি? আমরা কি করতে পারি? আমাদের কি দোষ? ” রাগ করবেন না প্লিজ, সত্যি বলতে আসল দোষ আমাদের। আমরা অনেক বিষয় নিয়েই কথা বলি এবং তর্ক করি, অনেক কিছুই বুঝি কিন্তু শিক্ষা নামক বিষয়টি নিয়ে আমরা কখনোই তেমন কিছু বলি না। আশ্চর্য ব্যাপার যে এ বিষয়ে সরকারের কাছে আমাদের কোন দাবি-দাবা নেই। মূলত আমরা এবিষয়ে কথা বলার প্রয়োজনই মনে করি না। আর এভাবেই আমাদের অসচেতনতার সুযোগে কানা, খোঁড়া আর লুলা হয়ে গেছে আমাদের শিক্ষা ব্যাবস্থা। ফলে এই নষ্ট মেশিন দিয়ে প্রতিনিয়ত দলে দলে বের হচ্ছে শিক্ষার নামে ধোঁকা খাওয়া হাজারো যুবক। আর এই ভয়ংকর ব্যাপারটিতে আমার এবং আপনার মত মুখে কুলুপ আঁটা ভদ্রলোকেরাই দ্বায়ী।
কেননা, আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে আমাদের একটি বড় জনসচেতনতা দরকার এবং এটা এখন সময়ের দাবি কিন্তু এ বিষয়টি আমরা কেউ তেমন আমলেই নেই না। অথচ আমাদের এই পদক্ষেপের অভাবে দিন দিন দুর্বল হয়ে যাচ্ছে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম। যার ভয়ংকর প্রভাব ইতিমধ্যে আমাদের উপরে পরা শুরু হয়ে গেছে।
ত্রুটিপূর্ণ শিক্ষা ব্যবস্থা কিভাবে আমাদেরকে জাতিগত ভাবে দুর্বল করে দিচ্ছে সে বিষয়টি আজকের সবার সামনে তুলে ধরতে চাই :
প্রথমত, প্রি’ম্যাচিউর স্কুলিং:
একটা নির্দিষ্ট বয়সের আগে কিংবা কমপক্ষে কিছু বিষয় বুঝতে শেখার আগে শিশুকে পড়ার চাপ দেয়া উচিত নয়। এতে তার ব্রেইন এর বিকাশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। খুব কম বয়সে রেগুলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করা এক ধরনের আদিখ্যেতা। মূলত এই সময়টা শিশুর প্রাকৃতিক ভাবে শেখার সময়। অথচ তাকে দেয়া হচ্ছে একধরনের মানসিক চাপ। আর কে.জি স্কুল ব্যবসাচক্র এবং অস্থির অতি উৎসাহী পিতা-মাতা এই সমস্যার জন্মদাতা।
দ্বিতীয়ত, পেশাগত অদক্ষতা:
আমাদের বেশিরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতেই মানসম্মত শিক্ষকের ভয়ানক অভাব, আবার যারা মানসম্মত নয় তাদের মান উন্নয়নের চেষ্টাও নেই। নেই কোন সৃজনশীলতা, গবেষণা কিংবা সুন্দরভাবে পড়ানো নিয়ে কোন কৌতুহল। কেবলমাত্র প্রতিষ্ঠানে বসে আড্ডাবাজি করা, রাজনীতির গুষ্টি উদ্ধার করা, গীবত তোহমোত, নিজের পরিবারের বিভিন্ন সাফল্য ও সমস্যা নিয়ে মুখরোচক গাল গল্প করা, রিলস দেখা, লুডু খেলার এমনকি পরকীয়া করার মত অদ্ভুত সব কর্ম করতে দেখা যায় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষক-শিক্ষিকাকে। সত্যিকার অর্থে তারা কখনো শিক্ষক হতে চাননি কিন্তু কোন চাকরি না পেয়ে হয়তো শিক্ষকতা মেনে নিয়েছেন। আর যারা নিবেদিত শিক্ষক তারা হন কোনঠাসা কিংবা অনুরোধে ঢেকি গিলতে গিলতে ক্লান্ত।একাই কিংবা দু-চারজন মিলে প্রতিষ্ঠানকে টেনে টেনে তারাও অবশেষ হয়ে যান বিরক্ত এবং হতাশ।
তৃতীয়ত, লক্ষ্যহীনতা:
সঠিক ও পরিকল্পিত লক্ষ্যহীন একমুখি শিক্ষাযাত্রা হলো আরো একটি মারাত্মক সমস্যা। আমাদের বাংলাদেশের সিংহভাগ পিতা-মাতা শিক্ষার্থীরা কি পড়ছে, কেন পড়ছে তাই জানেন না এবং জানার চেষ্টাও করেন না। তারা শুধু একটা বিষয় জানেন তাহলো টাকা খরচ করে এবং প্রতিষ্ঠানের উপর ভরসা করে সন্তানকে পড়াতে হবে। কি পড়াতে হবে, কিংবা সে আদৌ কিছু পারে কিনা সেটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো শুধুমাত্র পরীক্ষার নম্বর আর স্যারের প্রশংসা। আর এক্ষেত্রে আরেকটি সমস্যা হল পিতা মাতার শিক্ষকের উপর অন্ধবিশ্বাস এবং পুতুলসম নির্ভরতা। একজন শিক্ষক ভালো কি মন্দ? , কেমন পড়ান?, চরিত্র কেমন?, কি শেখান? এইসব প্রাথমিক বিষয়গুলোও বেশিরভাগ বাবা-মা’ই খোঁজ নেননা। শুনতে খারাপ হলেও সত্যি যে, আমাদের সমাজে চুলের কাটিং নিয়ে যতো গালিগালাজ করা হয় সে হিসেবে নুচ্চা টিচার কিংবা নুচ্চা মাওলানাকে বিশেষ কিছু বলা হয়না। যাইহোক, প্রতিষ্ঠানের কিছু শিক্ষকের উপর সব দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে নিজের কাজে ব্যস্ত থাকেন বাবা-মা। অবস্থা তো এমন যে কখনো দেয়া যায় স্কুল শিক্ষক একজন এসএসসি পরীক্ষার্থীর নাম ও বাবার নাম ভুল করে বংশও পাল্টে ফেলেন সেটাও অনেক বাবা-মা জানেই না। নিজের সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে অন্যের ওপর এতটা ভরসা করে নিশ্চিত থাকতে চাওয়া এমন বাবা-মা মুলত বেকারত্বের পরোক্ষ পৃষ্ঠপোষক।
চতুর্থত, অবাস্তব শিক্ষাব্যবস্থা:
এই কথাটা অনেকেই মানতে পারবেন না। কিন্তু এটাই সত্যি যে বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় বাস্তবতার কোন ছোঁয়া নেই। খুব ভালো মানের প্রতিষ্ঠান বাদে সাধারণভাবে প্রায় সকল সকল প্রতিষ্ঠানেই লেখাপড়া মুলত তত্বীয় বইয়ে বন্দি। অদক্ষ শিক্ষক, অনুন্নত শিক্ষা উপকরণ ও বাস্তবমুখী সহশিক্ষা কার্যক্রম না থাকায় ছাত্র-ছাত্রীদের কেবল মুখস্থ করতে হয়। তারা বাস্তবতার সাথে মিলিয়ে কোন কিছু শিখতে পারে না। আর ঠিক এই কারণেই শিক্ষার প্রতি বেশিরভাগ ছাত্রদের আগ্রহও থাকে না। স্কুলে ছাত্রদের ভালো লাগেনা। সেখানে ভালো লাগার সাথে শেখার কিছু নেই। আছে শুধু না বুঝে গেলার জন্য একটা সিলেবাস।
উদাহরণস্বরূপ, ইংরেজি আমাদের দেশে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, অথচ ক্লাসের অধিকাংশ ছাত্রছাত্রীরা ইংরেজি রিডিং পড়তেই পারে না আর শিক্ষকের সেই বিষয়ে কোন কোন ভ্রুক্ষেপ নেই! নেই কোন কৌশল ! কি আশ্চর্য! স্কুলের ক্লাসে ইংরেজি শিক্ষক সপ্তাহে একদিনও ইংরেজিতে কথা বলেন না! একবার ভাবুন আপনার মা যদি আপনার সাথে বাংলায় কথা না বলে ছোট থেকে আপনাকে কারক বিভক্তি এবং সমাস মুখস্ত করাতো তাহলে আপনার ভাষা শিক্ষা কেমন হতো ?
পঞ্চমত, ফেইক পাশ সিস্টেম:
পরীক্ষা অর্থ মূল্যায়ন। এর দ্বারা একজন শিক্ষার্থীর লেখাপড়ার অবস্থা নির্ণয় হয় এবং তারপর তার ঘাটতি পূরণে তাকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ এবং সহযোগিতা দেয়া হয়। তার সমস্যা গুলো সমাধান করা হয় যাতে সে পরে ভালো করতে পারে (উন্নত বিশ্বে এমনটাই হয়) কিন্তু আমাদের দেশে কোন এক অস্বাভাবিক কারণে পরীক্ষার্থীদের গ্রেস দিয়ে, কিংবা লেখা ছাড়াই নাম্বার দিয়ে পাশের হার বাড়ানো হয় ! ফলে শিক্ষার্থী মনে করে সে লেখাপড়ায় একদম খারাপ না। এদিকে বাস্তবতা পুরাই উল্টো।
ধরুন, একজন দুর্বল এবং অমনোযোগী সৈন্যকে ট্রেনিং এর সময় পার করিয়া দেয়া হলো এবং তাকে বলা হলো তুমি খুব ভালো যুদ্ধ কর, তুমি কমান্ডার হতে পারবে। এভাবে ট্রেনিং শেষে যখন তাকে যুদ্ধের ময়দানে পাঠানো হলো তখন সে বুঝতে পারল যে, সে কোন দক্ষ যোদ্ধা নয়। এদিকে তার জান নিয়ে টানাটানি। তখন তার কেমন অবস্থা হবে ? ঠিক এমনই দুর্দশা হয়েছে আমাদের শিক্ষার্থীদের। তাদেরকে মিথ্যা পাশ করিয়ে দেয়া হচ্ছে।এভাবে তারা এসএসসি, এইচএসসি, অনার্স এমনকি মাস্টার্সও অবলীলায় পাস করে যাচ্ছেন (জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় নাটক)।
এভাবে প্রায় দশ বছর পড়ালেখা করার পর প্রায় আশি ভাগ শিক্ষার্থী বুঝতে পারেন যে তারা আসলে এতদিন কিছুই শিখেননি, তেমন কিছুই জানেন না। অথচ যদি এই বিষয়টি এমন হতো যে কেউ পাশ করলে পাশ এবং ফেল করলে ফেল তাহলে যারা সাধারণ শিক্ষায় ভালো করতে পারত না তারা অবশ্যই তাদের ভালো লাগার কাজে বাস্তব দক্ষতা অর্জন করতে পারতো এবং কর্মক্ষেত্রে এগিয়ে যেতে পারতো। কেননা প্রত্যেকেরই কোন না কোন মেধা রয়েছে এবং সময়মত সঠিক পরিবেশ পেলে তা বিকশিত হয়। আমার এমন অনেক বন্ধু রয়েছে যারা পড়ালেখায় পাশ করতে না পেরে কর্মে দক্ষতা অর্জন করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ভালো পদে আছেন। আর মিথ্যা পাশের মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থী যখন অনেক ডিগ্রী পেয়ে যায় তখন সে যোগ্যতার অভাবে চাকরিতে টেকেন না। ওদিকে সে আর চাইলেও চাকরি-বাকরি ছাড়া অন্য কোন কাজ করতে পারে না। অনেক ক্ষেত্রেই তাদের সম্মানে বেধে আসে। তাছাড়া পারিপার্শ্বিক পরিবেশটাও ততদিনে আর তার অনুকূল থাকে না। কিছু বুদ্ধিমান শিক্ষার্থী অনেক পরিশ্রম করে উপায় বের করে নিলেও বেশিরভাগই ব্যর্থ হন। যার অর্থ হলো, এই দীর্ঘ সময়ে মিথ্যা পাশ দিয়ে তাকে মূলত ধোঁকা দেয়া হয়েছে। পাশ নামক ধোঁকা এবং উচ্চশিক্ষা নামক মরীচিকা দেখিয়ে একজন পূর্ণাঙ্গ বেকার হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে।
কিন্তু যতদিনে সেটা টের পায় ততদিনে খেলা শেষ ! একজন শিক্ষার্থীকে সুযোগের নামে মিথ্যা আশা দিয়ে এরকম ভুল পথে পরিচালিত করা মূলত তাকে গলা টিপে হত্যা করার মতই। তার সম্ভাবনাময় ভবিষ্যৎটা তাকে কোনদিন খুঁজতেই দেয়া হলো না !
এভাবেই, হ্যাঁ ঠিক এভাবেই প্রতিবছর আমাদের লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ আমরা সজ্ঞানে নষ্ট করে দিচ্ছি। আর এই শিক্ষার্থীরা হয়ে উঠছে আমাদের বেকার যুবসমাজ। বেকারত্বের বোঝা এবং সামাজিক চাপ মাথায় নিয়ে তারা বেছে নিচ্ছে নিম্নমানের জীবনযাত্রা আবার কেউ বা হচ্ছেন মাদকাসক্ত। এদিকে দীর্ঘ সময় নষ্ট করে রোগা-পটকা শিক্ষা নিয়ে তারা মানসিকভাবে এতটাই দুর্বল হয়ে যান যে বেশিরভাগই ব্যবসায়ীক উদ্যোক্তা হতেও ভয় পান। ভেতর থেকেই তারা হয়ে যান একদম দূর্বল এবং হীনমন্য অথচ এ বিষয়ে তাকে এমন কোন দোষ দেয়া যায় না কারণ তিনি শিক্ষার নামে প্রতারিত হয়েছেন।
এখন কথা হল এর প্রতিকার আদৌ সম্ভব কিনা? উত্তর হলো, অবশ্যই সম্ভব। বর্তমান বিশ্বে প্রযুক্তির কল্যাণে অনেক রকম কাজের সম্ভাবনা বেড়েছে। তাছাড়া এমনিতেও বাংলাদেশে কারিগরি শিক্ষার একটি সুগঠিত ব্যবস্থাপনা রয়েছে। শুধুমাত্র কারিগরি শিক্ষার এই ক্ষাতটিকে সঠিকভাবে উন্নত এবং গতিশীল করতে পারলেই দেশের তরুণ প্রজন্মের একটি বিরাট অংশ রীতিমতো জনশক্তিতে পরিণত হবে। বিভিন্ন ট্রেডে দক্ষতা অর্জন করার মাধ্যমে তাদের কর্মসংস্থান শুধু দেশে নয় বরং বিদেশেও হবে।
আর যারা জেনারেল কিংবা কারিগরি কোন জায়গাতেই লেখাপড়া করতে চাইবে না তাদেরকে মিথ্যা পাস বা গ্রেস্ দিয়ে জোর করে পড়ালেখায় আটকে না রেখে তাদের জন্য সহজ ট্রেড ভিত্তিক বিভিন্ন রকম বাস্তবমুখী কাজের ট্রেনিং এর ব্যবস্থা করলে স্বাভাবিকভাবেই জীবনের দায়ে তারা কোনো না কোনো কাজ শিখে নেবে। যেমন, ধরা যাক সরকারের পক্ষ থেকে যদি রাজ মিস্ত্রির কাজ, মোটরসাইকেল মেরামত, গাড়ি মেরামত, বিভিন্ন মেশিনারিজ মেরামত, ইলেকট্রিক্যাল ওয়ার্কশপ, ডাইভিং, কুকিং এরকম বিভিন্ন প্রকার দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় কাজের ট্রেনিং দেওয়া হয় তাহলে কম শিক্ষিত মানুষেরা নির্দিষ্ট উপায়ে একটি দক্ষতা শিখে নিজেকে কাজে লাগাতে পারবে। প্রথমে ট্রেনিং গুলো ন্যূনতম ৩ মাসের হবে। এবং এর একটা গ্রেডিং থাকবে। পরবর্তী ট্রেনিং গুলো করলে কর্মীদের ট্রেনিং ও কর্মদক্ষতাভিত্তিক গ্রেড দেওয়া হবে যার দ্বারা আমাদের দেশের মোট কর্মক্ষম জনশক্তির দক্ষতার মাত্রা অনুযায়ী তাদেরকে কাজে লাগানো সম্ভব হবে। তারাও একটি কর্পোরেট উপায়ে কর্ম সম্পাদন করতে পারবে। এতে তাদের মর্যাদা বাড়বে এবং তারাও শোষনহীনভাবে নিজেদের কাজের মূল্য পাবে।
প্রকৃতপক্ষে একজন নিম্নমানের ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার চাইতে একজন উচ্চমানের টেকনিশিয়ান হওয়া ভালো এতে কাজে তৃপ্তি থাকে আত্মবিশ্বাস থাকে শেখার আগ্রহ থাকে। মানুষকে তার নিজের যোগ্যতা বুঝতে দেয়া এবং সঠিক সময়ে উপযুক্ত মানের প্রশিক্ষণ দেয়ার গুরুত্ব যে কতটা ব্যাপক তা এই একটি লেখায় তুলে ধরা অসম্ভব। সে বিষয়ে আলোচনা অন্যদিন হবে ইংশাআল্লাহ।
বিশ্বাস করুন অন্য কিছুই নয় কেবলমাত্র রাষ্ট্রের অবহেলায় “শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড” কথাটি আমাদের লাখো লাখো যুবক-যুবতীর জন্য একটি রহস্যময় অনিশ্চিত বাক্যে পরিনত হয়েছে। তাই একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ঘুরে দাঁড়াতে হবে এখনই। আওয়াজ তুলতে হবে। জাতির পা আসলে কিভাবে ধরতে হয় আমি জানিনা। কিন্তু আমার মনে হয় প্রতিটি মিডিয়ায়। প্রতিটি সভ্য আড্ডায়। প্রতিটি উপযুক্ত জায়গায় আমরা যদি এই বিষয়টি নিয়ে প্রত্যেকেই আলোচনা করি তাহলে হয়তো অদূর ভবিষ্যতেই আমরা আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে সুন্দর করে গড়ে তুলতে পারব। নিজেদের বুঝতে হবে এবং সরকারকে বলতে হবে, “আর নয় পাশ পাশ খেলা।” আধুনিক যুগের মানুষ হিসেবে এখন আমাদের নিজেকে জানতে হবে, নিজের দক্ষতা ও আগ্রহের জায়গা বুঝতে হবে এবং সঠিক ক্ষাতে সঠিক উপায়ে পরিশ্রম করতে হবে। তবেই এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। ভালো থাকবে আমাদের প্রজন্ম।
Leave a Reply